নিজস্ব প্রতিবেদক: এ সময়ের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী সাইফ শুভর সাথে কথা বলছেন দৈনিক প্রত্যয়ের প্রতিবেদক সোহানুর রহমান সোহাগ;
কেমন আছেন?
জ্বি আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি।
লকডাউন কেমন কাটছে?
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের গতিধারাকে চরমভাবে ব্যাহত করেছে। এমন অবস্থায় আসলে কারোই ভালো থাকবার কথা নয়। তবুও ভালো থাকতে হয় তাই ভালো আছি। লকডাউন এর পুরো সময়টাই ঘরে থাকছি বই পড়ছি গান শুনছি আর পরিবারকে সময় দিচ্ছি।
কাজ কেমন চলছে?
সাধারণত ওপেন কনসার্ট এবং স্টুডিও ওয়ার্ক নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করি। লকডাউনের জন্য যেহেতু ওপেন কনসার্ট এবং বাইরের কোনো কাজ নিয়ে ব্যস্ততা নেই, তাই এখন পুরো সময়টাই স্টুডিও ওয়ার্ক এবং নতুন গান করার জন্য দিচ্ছি। এছাড়া বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ গানের অনুষ্ঠানে যুক্ত হচ্ছি।
রিসেন্ট কি কাজ আসছে আপনার?
নবীন গীতিকবি মহাম্মদ শোয়াইব এর কোথায় সংগীত পরিচালক রাজন সাহার সুর এবং সংগীতায়োজনে “যত দূরে যাও” শিরোনামের একটি গান এ বছর ঈদুল আজহায় প্রকাশ পাবার কথা ছিল। “যত দূরে যাও” গানটি মূলত হার্ট ব্রেক স্যাড সং পুরো গানটিই রকিং প্যাটার্নের করা হয়েছে। আমিও গানটি বেশ উদ্যম নিয়ে গেয়েছি। যারা রক প্যাটার্নের গান পছন্দ করেন তাদের গাছে গানটি অসম্ভব ভাল লাগবে। আমার কাছে মনে হয় আগে জীবন পরে বিনোদন। দেশের করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে “যত দূরে যাও” সহ অন্তত পাঁচটি নতুন গান রিলিজ স্থগিত রেখেছি। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে দর্শক শ্রোতাদের জন্য সবগুলো গান একে একে প্রকাশ করা হবে।
মাঝেমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু অসামাজিক গান ভাইরাল হয় সেগুলো সম্বন্ধে আপনার মতামত কি?
হ্যাঁ এসব কন্টেন প্রায়ই চোখে পড়ে, আমি এগুলোকে গান বলতে চাই না। এগুলোকে স্রেফ একটি বাজে কন্টেন বলতে চাই, এই সমস্ত কন্টেনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার আমি আমার ব্যক্তিগত ফেইসবুক প্রোফাইল থেকে প্রতিবাদ জানিয়েছি। দেখুন একই দেশের সংস্কৃতি সে দেশের পরিচয় বহন করে এটা আমরা সবাই জানি তবে দুঃখজনক হলেও সত্য কথাটি আমরা মানি না। বরং এই ধরনের অপসংস্কৃতি প্রতীক বাজে কন্টেন গুলো কে আমরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজ দায়িত্বে আপলোড করি এবং এসব অপসংস্কৃতির ব্যাপক প্রচার করি। এতে করে আমরা নিজেরাই যে আমাদের সংস্কৃতির বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছি সৌন্দর্য এবং মান নষ্ট করছি সেদিকে আমাদের কারো খেয়াল নেই। দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে সকলের উচিত সুস্থ ধারার সুন্দর সাংস্কৃতিক চর্চা কে সমর্থন দেওয়া এবং অসুস্থতার অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান স্পষ্ট রাখা। তা না হলে কোনটা আমাদের আসল সংস্কৃতি আর কোনটা নয় সেটা নির্ধারণে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিভ্রান্তিতে পড়বে। বিশ্ব ব্রহ্মান্ডে ক্ষতির মুখে পড়বে আমাদের রাষ্ট্রীয় পরিচয় এবং ইমেজ।
ভবিষ্যতের তরুণ প্রজন্মের শিল্পীদের জন্য আপনার কি উপদেশ থাকবে?
তারুণ্য মানে উদ্দীপনা আর নতুন আমার কাছে সব সময় নতুনই, দেশের নবীন শিল্পীরা অসম্ভব মেধাবী এবং পরিশ্রমী। সঙ্গীতাঙ্গনে নতুনরা প্রায় সকল ক্ষেত্রেই ভালো করছে। তাদের উদ্দেশ্যে উপদেশ নয় একটি পরামর্শ দিতে চাই। সঙ্গীত একটি গুরুমুখী বিদ্যা শুদ্ধ ধরার সংগীত চর্চা করতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে সংগীত শেখার কোন বিকল্প নেই। এই কথাটি মাথায় রেখে সামনের দিকে এগুলে শিল্প সংস্কৃতি চর্চায় বাংলাদেশ একদিন বিশ্বজয় করবে বলে আমার বিশ্বাস। নতুনদের জন্য সব সময় শুভ কামনা।
করোনা পরিস্থিতিতে আপনাদের শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে কি বলবেন?
বর্তমান সময়ে সবচাইতে আতঙ্কের কারণ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। লকডাউন এর এই সময়টাতে প্রয়োজন ছাড়া ঘরেই থাকুন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। সচেতনতা অবলম্বন করুন টিকা নিন সুস্থ থাকুন, পরিবারকে সুস্থ রাখুন। ভালোবাসা সব সময়।